গুণগত বিশ্লেষণের গুরুত্ব। Significance of Qualitative Analysis.

যে পরীক্ষার সাহায্যে কোন যৌগ কী কী মৌল দ্বারা গঠিত বা কোন মিশ্রণে কী কী উপাদান থাকে অথবা কোন জৈব যৌগে কী কী মৌল বা কার্যকরী মূলক উপস্থিত তা জানা যায় অর্থাৎ কোন পদার্থের সংযুক্তি জানা যায় তাকে গুণগত বিশ্লেষণ বলে । গুণগত বিশ্লেষণের গুরুত্ব ব্যাপক। যেমন-

১. লবণ বিশ্লেষণ : লবণে উপস্থিত ক্ষারকীয় ও অম্লীয় মূলক শনাক্ত করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন খনিজ দ্রব্যে কী কী মৌল উপস্থিত থাকে তা নির্ণয় করা যায় ।

২. জৈব যৌগ বিশ্লেষণ : লেসাইন পরীক্ষার সাহায্যে একটি জৈব যৌগে উপস্থিত মৌল যেমন শনাক্ত করা যায় তেমনি গুণগত বিশ্লেষণে জৈব যৌগের অণুতে কী কার্যকরী মূলক রয়েছে তাও জানা যায় ।

৩. খাদ্যে ভেজাল নির্ণয় : অসাধু ব্যবসায়ীরা অনৈতিক লাভের জন্য খাদ্য-দ্রব্যে, ফল-মূলে ও দুধে প্রায়শই ভেজাল মিশিয়ে থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। যেমন মাছ বা ফলমূল যেন সহজে না পচে তার জন্য ফরমালিন মেশানো হয়। খাদ্যে মেশানো বিষাক্ত এ ফরমালিন বা দুধে পানি মেশানো হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে জানা যায়। এর প্রেক্ষিতে ভেজাল বা বিষমুক্ত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।

৪. পরিবেশ দূষণ রোধ : আমাদের চারপাশে বায়ু, পানি বা মাটিতে কী ধরনের দূষণ বিদ্যমান তা গুণগত বিশ্লেষণ দ্বারা জানা যায়। নদীর পানিতে ফেলা শিল্পকারখানার বর্জ্যও যান্ত্রিক বিশ্লেষণ দ্বারা নির্ণয় করা সম্ভব। এরপর প্রয়োজনে দূষণের মাত্রা সীমিত রাখার ব্যবস্থা করা যায়।

৫. প্রসাধন সামগ্রীর ভেজাল নির্ণয় : প্রসাধন সামগ্রী স্বাস্থ্যসম্মত না হলে নানাবিধ চর্মরোগ এমনকি দুরারোগ্য ক্যান্সার হতে পারে। তাই প্রসাধন সামগ্রী পরীক্ষা করে তাদের ব্যবহারে আমরা সচেতন হতে পারি।

৬. কারেন্সি নোট, পাসপোর্ট পরীক্ষা : অধুনা গুণগত বিশ্লেষণের একটি উল্লেখযোগ্য ব্যবহার হলো জাল নোট, পাসপোর্ট বা ক্রেডিট কার্ড শনাক্তকরণ । UV রশ্মির সাহায্যে নির্ণয় করা যায় কারেন্সি নোট বা পাসপোর্ট আসল বা জাল কিনা। এর সাহায্যে প্রতারণা প্রতিরোধ করা যায়।