শ্বসনের গুরুত্ব লিখ।
উদ্ভিদ জীবনে শ্বসনের গুরুত্ব বর্ণনা করা হলো:
- জীবের দেহে শক্তি সরবরাহ: জীবের প্রতিটি প্রক্রিয়া (যা জীবনের বৈশিষ্ট্য) পরিচালনার জন্য শক্তির প্রয়োজন আর এ শক্তি আসে শ্বসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। কাজেই শক্তি উৎপাদনের মাধ্যমে জীবের সকল জৈবিক প্রক্রিয়া পরিচালিত করার মধ্যেই রয়েছে যে কোনো জীবের জীবনে শ্বসন প্রক্রিয়ার প্রকৃত গুরুত্ব।
- খাদ্য প্রস্তুত: শ্বসন প্রক্রিয়ায় নির্গত CO₂ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয় এবং খাদ্য উৎপন্ন করে। সে খাদ্য যেমন উদ্ভিদ জীবনকে রক্ষা করে, তেমনই আবার সমগ্র প্রাণী জগতকেও রক্ষা করে।
- খনিজ লবণ পরিশোষণ: উদ্ভিদের খনিজ লবণ পরিশোষণে শ্বসন প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শ্বসনের হার কম হলে লবণ পরিশোষণ হার কমে যায় এবং বৃদ্ধি ও অন্যান্য জৈবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।
- কোষ বিভাজন ও দৈহিক বৃদ্ধি: শ্বসন প্রক্রিয়ার প্রভাব কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার উপরও প্রতিফলিত হয়। কোষ বিভাজনের প্রয়োজনীয় শক্তি ও কিছু আনুষঙ্গিক পদার্থ শ্বসন প্রক্রিয়া হতে আসে। তাই এ প্রক্রিয়া জীবের দৈহিক বৃদ্ধিও নিয়ন্ত্রণ করে।
- তাপমাত্রা রক্ষা: শ্বসনে সৃষ্ট তাপ জীবদেহের প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা বজায় থাকে।
- এনজাইম ও জৈব অ্যাসিড উৎপাদন: এ প্রক্রিয়া বিভিন্ন উপক্ষার ও জৈব অ্যাসিড সৃষ্টিতে সহায়তা করার মাধ্যমে জীবনের অন্যান্য জৈবিক কার্যক্রমেও সহায়তা করে।
- বায়ুমণ্ডলে CO₂ ও O₂ এর ভারসাম্য রক্ষা: সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডল হতে CO₂ গৃহীত হয় এবং O2 বর্জিত হয় কিন্তু শ্বসন প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডল হতে O₂ গৃহীত হয় এবং CO₂ বর্জিত হয়, তাই বায়ুমণ্ডলে CO₂ ও O2 এর ভারসাম্য রক্ষিত হয়।
- শিল্পে ব্যবহার: বিভিন্ন অণুজীবের অবাত শ্বসন প্রক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে গড়ে উঠেছে অ্যালকোহল, মদ, সিরকা, আচার, মাছ ও মাংসের সস ইত্যাদি উৎপাদন শিল্প প্রতিষ্ঠান।
- বেকারি ও দুগ্ধজাত শিল্প: বিভিন্ন অণুজীবের অবাত শ্বসন প্রক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে মানুষের প্রয়োজনীয় বেকারি পাউরুটি) ও দুগ্ধজাত দ্রব্যাদি (দই, পনির) উৎপাদন করা হয়।
আরও পড়ুন-
শ্বসনের অভ্যন্তরীণ প্রভাবকসমূহ কি কি?