কিভাবে পানি দূষণ রোধ করা যায়?
আমাদের দেশে পানি দূষণের প্রধান প্রধান উৎস হচ্ছে শিল্পজাত বর্জ্য নির্গমন, পয়ঃনিষ্কাশন জনিত এবং কৃষি সম্পর্কিত বর্জ্য। এ তিনটি উৎস যদি কার্যকরীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তবে অনেকাংশ ক্ষেত্রেই পানি দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এজন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতিসমূহ অবলম্বন করা যেতে পারে
- আমাদের দেশ শিল্পে উন্নত না হলেও পানি দূষণের ক্ষেত্রে শিল্পজাত বর্জ্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। উন্নতবিশ্বে প্রায় সকল শিল্প কারখানাতে নিজস্ব বর্জ্য সংশোধনাগার আছে। কিন্তু নিয়ম থাকলেও আমাদের দেশে খুব কম শিল্প কারখানা আছে যাদের নিজাম বলো সংশোধনের ব্যবস্থা আছে। এক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম-নীতি মেনে সকল শিল্প কারখানায় অবশ্যই বাধ্যতামুলকভাবে নদী বা অন্য কোন জলাধারে তরল বা কঠিন বর্জ্য মেশার আগেই তা সংশোধনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- জমিতে অপরিকল্পিতভাবে এবং অতিরিক্ত পরিমাণ রাসায়নিক সার ব্যবহার রোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে জৈব সার ব্যবহার করা যেতে পারে। জমিতে প্রয়োগকৃত নাইট্রেট বা ফসফেট সার বৃষ্টির পানি যারা ঘুয়ে যাতে নদীতে পতিত না হতে পারে সেজন্য জমির চারপাশে উঁচু বাঁধ দিতে হবে।
- পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য নর্দমাবাহিত ময়লা পানি অবশ্যই রাসায়নিক বা জীব-রাসায়নিক পদ্ধতিতে জৈব পদার্থ ক্ষুদ্রাংশকরণ বা ধ্বংসকরণের (degradable) মাধ্যমে তা নদী বা জলাশয়ে নির্গত করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে বা সংশোধনের সকল ধাপ সুচারুভাবে মেনেই সম্পাদন করতে হবে।
- সংশ্লেষিত ডিটারজেন্ট ব্যবহার নিষিদ্ধ করে বায়ো-ডিগ্রেডিবল ডিটারজেন্ট অথবা পরিষ্কারক ব্যবহার করা যেতে পারে।
- রাসায়নিক কীটনাশক পানি দূষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। CI-যুক্ত কীটনাশক উৎপাদন ও আমদানি নিষিদ্ধ করে তুলনামূলক পরিবেশের জন্য কম ক্ষতিকর কীটনাশক বা জৈব কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রদত্ত নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করা উচিত।
- জলাধারের পাশে মলমূত্র ত্যাগ না করা, রোগীর জামা-কাপড় না ধোয়া, নদী বা পুকুরে পশুর গোসল না করানো।
- গৃহস্থালীর ময়লা আবর্জনা না ফেলা। এসব সচেতনতামূলক বিষয়গুলো সকলকে মেনে চলা উচিত।
পরিবেশ সংক্রান্ত অন্যান্য প্রশ্ন-
পরিবেশের উপর কীটনাশকের প্রভাব আলোচনা কর।
মানব স্বাস্থ্যের উপর মাটি দূষণের প্রভাব ব্যাখ্যা কর।