প্রস্বেদনের বাহ্যিক প্রভাবকসমূহ কি?
প্রস্বেদনের বাহ্যিক প্রভাবকসমূহ নিম্নরূপ:
- আলো: প্রখর সূর্যালোক স্বাভাবিকভাবেই বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে এবং যার ফলে বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতা হ্রাস পায় এবং প্রস্বেদনের হার বেড়ে যায়। আলোকের উপস্থিতিতে পত্ররন্ধ্র খোলা থাকে এবং আলোর অনুপস্থিতিতে পরবা বন্ধ হয়ে যায়। আর পত্ররন্ধ্র খোলা ও বন্ধ হওয়ার উপরই বেশির ভাগ প্রস্বেদন নির্ভরশীল। সমস্ত কারণেই প্রস্বেদনের হ্রাস বৃদ্ধিতে আলোর গুরুত্ব শীর্ষস্থানীয়।
- তাপমাত্রা: তাপের হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে প্রস্বেদন হারেরও হ্রাস-বৃদ্ধি হয়ে থাকে। কারণ তাপ বাড়লে বায়ুমণ্ডলের জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতা বেড়ে যায়, আপেক্ষিক আর্দ্রতা কমে যায়, ফলে বায়ু অধিক পরিমাণ জলীয়বাষ্প শোষণ করতে পারে। অপরদিকে তাপ বাড়লে পানিও দ্রুত বাষ্পে পরিণত হয় এবং প্রস্বেদনের হারকে ত্বরান্বিত করে। তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধির সাথে পত্ররন্ধের আয়তনেরও হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে থাকে। সুতরাং তাপ বিভিন্ন দিক হতে প্রস্বেদন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে থাকে।
- আপেক্ষিক আর্দ্রতা: আপেক্ষিক আর্দ্রতা কম হলে প্রস্বেদনের হার বেড়ে যায়। কারণ আপেক্ষিক আর্দ্রতা কম হলে বায়ু অধিক পরিমাণ জলীয়বাষ্প গ্রহণ করতে পারে। অপরদিকে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বেড়ে গেলে বায়ু কোষাভ্যন্তর হতে নির্গত জলীয়বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, ফলে প্রস্বেদনের হার হ্রাস পায়।
- বায়ুপ্রবাহ: উদ্ভিদের প্রস্বেদন অঙ্গের আশপাশের বায়ু সাধারণত বেশি আর্দ্র থাকে। কারণ এ অঞ্চল কোষাভ্যন্তর হতে নির্গত জলীয়বাষ্প সরাসরি গ্রহণ করে সম্পৃক্ত হয় এবং ক্রমান্বয়ে প্রস্বেদনের হারের হ্রাস ঘটে। প্রবাহিত বায়ু পাতার নিকট হতে অধিক আর্দ্র বায়ু প্রবাহিত করে নিয়ে যায়, ফলে স্থানটি কম আর্দ্র বায়ু দ্বারা পরিপূর্ণ হয়। কম আর্দ্র বায়ু কোষাভ্যন্তর হতে নির্গত জলীয়বাষ্প অধিকমাত্রায় গ্রহণ করে প্রস্বেদনের হারকে বাড়িয়ে দেয়।
- আবহমণ্ডলের চাপ: আবহমণ্ডলে চাপ কমার কারণে কম তাপে পানি বাষ্পে পরিণত হয় ফলে চাপ কমলে প্রস্বেদনের হার বেড়ে যায়। অনুরূপভাবে চাপ বাড়লে প্রস্বেদনের হার কমে যায়।
- মাটিস্থ পানি: মাটিতে পানির পরিমাণ বেশি থাকলে উদ্ভিদ মাটি হতে অধিকমাত্রায় পানি গ্রহণ করতে পারে। এর ফলে প্রস্বেদনের হারও বেড়ে যায়। অপরদিকে মাটিতে পানির প্রাপ্যতা কমে গেলে প্রস্বেদনের হারও ক্রমান্বয়ে কমে যায়।
প্রস্বেদন সম্পর্কিত অন্যান্য প্রশ্ন –