10 Best Refrigerator Brand in Bangladesh
আজ থেকে প্রায় ২৮২ বছর আগের ঘটনা। ১৭৪০ সালে উইলিয়াম কুলিনই নামক একজন স্কটিশ বিজ্ঞানী প্রথমবারের মতো কৃত্রিম রেফ্রিজারেটর এর ধারণা প্রবর্তন করেন। তিনি তার ধারণা মোতাবেক একটি গ্যাস আবিষ্কারের চেষ্টা করেন যেটি দ্বারা খাদ্যবস্তু বা কমল পানীয় সংরক্ষণের করে রাখা সম্ভব। বেচারা তার জীবন দশায় এই গ্যাস আবিষ্কার করতে সক্ষম হননি।
পরবর্তীতে ১৮০২ সালে টমাস মুর নামক একজন বিজ্ঞানী কেবলমাত্র দুগ্ধজাত পণ্য ঠান্ডা রাখার জন্য একটি আইস বক্স আবিষ্কার করেন। এবং তিনি এর নামকরণ করেন রেফ্রিজারেটর।
তবে সেই রেফ্রিজারেটর আধুনিক রেফ্রিজারেটরের তুলনায় ভিন্ন। যদিও ১৮৩০ সালের দিকে এই রেফ্রিজারেটরের চাহিদা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। কেননা সেই সময় আমেরিকায় গৃহযুদ্ধ চলছিল, আর তাই মানুষজন দীর্ঘ সময়ের জন্য খাবার সংরক্ষণ করতে এটি ব্যবহার করত।
এরপর ১৯১৩ সালে ফ্রেন্ড ডব্লিউ উলফ নামের একজন গবেষক আবিষ্কার করেন আধুনিক রেফ্রিজারেটর।
জানা যায় ১৯১৬ সালে “ফ্রীজিডেইরি” নামক একটি প্রতিষ্ঠান সর্বপ্রথম বারের মতো বাণিজ্যিকভাবে আধুনিক রেফ্রিজারেটর তৈরি করতে শুরু করে। যদিও তারা স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ঠিক তার দুই বছর পর অর্থাৎ ১৯১৮ সালে।
এরপর থেকে গোটা বিশ্বে শতশত রেফ্রিজারেটর কোম্পানি গড়ে উঠতে শুরু করে। যার অধিকাংশের নাম আমাদের সকলের কাছে পরিচিত। বর্তমানে বাংলাদেশের রেফ্রিজারেটর তৈরিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
কিন্তু প্রসঙ্গ যখন, বাংলাদেশের সেরা রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ড, তখন কেবলমাত্র হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে আসে। তাদের মধ্যে সেরা ১০ টি ব্র্যান্ড হলো:
- এলজি
- স্যামসাং
- শার্প
- হিটাচি
- কেলভিনেটর
- সিংগার
- ওয়াল্টন
- মিনিস্টার
- ভিশন
- কনকা
নিচে ব্র্যান্ডগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হল:
এলজি রেফ্রিজারেটর
দক্ষিণ কোরিয়ার ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে ১৯৪৭ সালে। ১৯৫৮ সালে এলজি ইলেকট্রনিক্স নামের একটি শাখা প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসা শুরু করে। ১৯৯০ সালে তারা যুক্তরাষ্ট্রে রেফ্রিজারেটর তৈরির কারখানা গড়ে তোলে। বিগত ১ দশকে বাংলাদেশের বাজারে যে কয়টি বিদেশি ব্র্যান্ড সুনাম অর্জন করেছে তার মধ্যে অন্যতম এলজি। বর্তমানের দেশের বাজারে রেফ্রিজারেটরের ১১ শতাংশ দখল করে রেখেছে এলজি। বাংলাদেশে এলজির পুরনো গ্রাহক নিহত কম নয়।
রেফ্রিজারেটরের দাম
বাংলাদেশের বাজারে এলজির ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটরগুলোর দাম শুরু হয় ৩০,০০০ টাকা থেকে।
এবং নন ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটরগুলোর দাম শুরু হয় ৫০,০০০ টাকা থেকে। মডেলভেদে দাম ভিন্ন হয়ে থাকে।
কেন এলজি রেফ্রিজারেটর কিনবেন?
- এলজি রেফ্রিজারেটরগুলোতে রয়েছে ম্যাক্সিমাম ফ্রিজার ক্যাপাসিটি।
- অধিকাংশ রেফ্রিজারেটরে ব্যবহার করা হয় ইনভার্টার লাইনার কম্প্রেসার।
- দীর্ঘকালীন গ্যারান্টি ও ওয়ারেন্টি দেওয়া হয় প্রতিটি ফ্রিজে।
- বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব।
স্যামসাং রেফ্রিজারেটর
দক্ষিণ কোরিয়ার ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি ১৯৩৮ সালের যাত্রা শুরু করে। বিভিন্ন প্রতিকূলতা পাড়ি দিয়ে বর্তমানে স্যামসাং বিশ্বের অন্যতম একটি টেকজান কোম্পানি। কেবলমাত্র দক্ষিণ কোরিয়াতে স্যামসাং এর মোট পাঁচ লক্ষ সুদক্ষ কর্মী রয়েছে।অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশের বাজারে স্যামসাং এর রেফ্রিজারেটর জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
২০১৯ সাল থেকে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় ফেয়ার ইলেকট্রনিকসের কারখানায় বাংলাদেশে তৈরি স্যামসাং এর রেফ্রিজারেটর বিক্রি হয় দেশের বাজারে।
২০২০ সালে, দেশের বাজারে সর্বমোট বিশ লাখ রেফ্রিজারেটর বিক্রি হয়েছে যার ৩৫ শতাংশ ছিল স্যামসাং এর রেফ্রিজারেটর।
স্যামসাং রেফ্রিজারেটর এর দাম
- সাধারণত নন ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর এর দাম শুরু হয় ৫৩,০০০ বা ৫৬,০০০ থেকে।
- তবে ফ্রস্ট ফ্রিজ গুলোর দাম শুরু হয় ৩৩,০০০ টাকা থেকে।
কেন স্যামসাং এর রেফ্রিজারেটর কিনবেন?
- লো এনার্জি কনজিউমিং টেকনোলজি ব্যবহার করার কারণে স্যামসাং এর রেফ্রিজারেটরের কোন প্রায় ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
- অসাধারণ নান্দনিক সব ডিজাইন।
- উন্নত মানের মেটেরিয়াল।
- দীর্ঘকালীন গ্যারান্টি ও ওয়ারেন্টি।
- বিশ্ববাজারে স্যামসাং সবচেয়ে সেরা টপ মাউন্ট রেফ্রিজারেটর উৎপন্ন করে থাকে।
- স্যামসাং এর অধিকাংশ রেফ্রিজারেটরে ব্যবহার করা হয় ফাস্ট কুলিং টেকনোলজি।
- ২০১৭ সাল থেকে স্যামসাং তাদের রেফ্রিজারেটরগুলোতে ইকো হেলথ কেয়ার টেকনোলজি ব্যবহার করতে শুরু করে, কাজেই রেফ্রিজারেটরগুলো পরিবেশবান্ধব।
শার্প রেফ্রিজারেটর
১৯১২ সালে জাপানের টোকিওতে একটি মেটালিক ওয়ার্কশপ স্থাপনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ব্যবসা বদলে তারা পেন্সিল তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠা করে। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ব্যবসার পরিসর। ১৯৬১ সাল থেকে শার্প ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন করতে শুরু করে।
বর্তমানে বাংলাদেশের বাজেটে প্রিমিয়াম ও বাজেট ফ্রেন্ডলি রেফ্রিজারেটর বিক্রি করে থাকে শার্প। তার পাশাপাশি শার্পের ডিপ ফ্রিজার বাংলাদেশের বাজারে বেশ জনপ্রিয়।
রেফ্রিজারেটরের দাম
বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে ৪০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ২,০০,০০০ টাকার বিভিন্ন প্রিমিয়াম ও বাজেট ফ্রেন্ডলি শার্প রেফ্রিজারেটর এবং ফ্রিজার অ্যাভিলেবল রয়েছে।
কেন কিনবেন শার্প রেফ্রিজারেটর?
- শার্প প্রতিনিয়তই রেফ্রিজারেটরের জন্য বাংলাদেশের গ্রাহকদের আকর্ষণীয় অফার দিয়ে থাকে তার পাশাপাশি রয়েছে অরিজিনাল পণ্যের গ্যারান্টি।
- এছাড়াও থাকছে সহজ কিস্তি সুবিধা।
- রয়েছে ফ্রী ডেলিভারি এবং ফ্রি ইনস্টলমেন্ট সুবিধা।
- দীর্ঘমেয়াদি গ্যারান্টি ও ওয়ারেন্টি।
- দক্ষ টেকনিশিয়ান দ্বারা সার্ভিসিং এর সুবিধা।
হিটাচি রেফ্রিজারেটর
১৯১২ সালে ইলেকট্রনিক পণ্য সার্ভিসিং এর একটি ওয়ার্কশপের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেছিল হিটাচি। যদিও রেফ্রিজারেটর তৈরির পরিকল্পনা খুবই সম্প্রতি।
বাংলাদেশের বাজারে রেফ্রিজারেটর ছাড়াও আরো বেশ কয়েক রকমের হোম এপ্লায়েন্স বিক্রি করে থাকে হিটাচি।
২০২১ সালের প্রতিষ্ঠানটির স্টক প্রাইস ৭১% বৃদ্ধি হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল স্মার্ট রেফ্রিজারেটর বিক্রি।
রেফ্রিজারেটর এর দাম
বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে ৯০,০০০ টাকা থেকে ৩,৫০,০০০ টাকার হিটাচি রেফ্রিজারেটর অ্যাভিলেবেল রয়েছে।
কেন ক্রয় করবেন হিতাচি রেফ্রিজারেটর:
- দেশের ১৪ টি লোকাল ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে ছয় মাসে বিনা সুদে রেফ্রিজারেটর ক্রয়ের সুবিধা প্রদান করে হিটাচি।
- সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন বিক্রয়ত্তর সেবা প্রধান সুবিধা।
- সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি, এছাড়াও রয়েছে কিছু স্মার্ট গেজেট/ফিচারস।
- ফ্রি হোম ডেলিভারি এবং ইনস্টলমেন্ট সুবিধা।
কেলভিনেটর রেফ্রিজারেটর
আমেরিকা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি ১৯১৬ সালে উইলিয়াম থমাস অর্থাৎ লর্ড কেলভিনের নাম অনুসারে এই প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয় কেলভিনেটর।
বর্তমানে কেলভিনেটরের অধিকাংশ রেফ্রিজারেটর উৎপন্ন করা হয় অস্ট্রেলিয়া এবং মালয়েশিয়া। সাধারণত মালয়েশিয়ায় উৎপন্ন কেলভিনেটর রেফ্রিজারেটর গুলো বাংলাদেশে রপ্তানি করা হয়ে থাকে।
রেফ্রিজারেটরের দাম
বাংলাদেশের বাজারে অতি আকর্ষণীয় মূল্যে বিক্রি হয়ে থাকে কেলভিটরের রেফ্রিজারেটর। তবে তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় কেলভিনেটরের ২৭৯ লিটারের ডিফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর, যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩৬,০০০ টাকা ।
এছাড়া ৩০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে আড়াই লাখ টাকার কেলভিনেটরের বিভিন্ন রেফ্রিজারেটর বিক্রি হয়ে থাকে দেশের বাজারে।
কেন কিনবেন ক্যালভিনেটর রেফ্রিজারেটর?
- সাশ্রয়ী মূল্যে সর্বোচ্চ মান সম্পন্ন প্রোডাক্ট।
- দেশের বিভিন্ন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে বিনা সুদে দীর্ঘমেয়াদি ই এম আই সুবিধা।
- ইজি ইনস্টলেশন ও সার্ভিসিং সুবিধা।
- ইকো হেলথ কেয়ার টেকনোলজি থাকায় পরিবেশ বান্ধব।
- লো এনার্জি কনজিউমার,যথেষ্ট বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর
আজ থেকে প্রায় আনুমানিক ১২০ বছর আগে অর্থাৎ ব্রিটিশ শাসনামলে সিঙ্গার সেলাই মেশিন তৈরির কারখানা স্থাপন করেছিল ভারতবর্ষে। তাদের এই ব্যবসা সেই সময় চরম সফলতা অর্জন করে, কেননা সেই সময় সেলাই মেশিনের কদর ছিল বেশ।
ধীরে ধীরে সিঙ্গার বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপন্ন করতে শুরু করে।
বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর অন্যতম একটি আস্থার প্রতীক। ধারণা করা হয় দেশের মাটিতেই সিঙ্গার আগামী পাঁচ বছরে ৭০ শতাংশ পণ্য উৎপন্ন করবে।
রেফ্রিজারেটরের দাম
বর্তমানে সিংগারের ফ্রিজারগুলো বিক্রি হয়ে থাকে ২০,০০০ টাকা থেকে। রেফ্রিজারেটরের স্টক শুরু ৩০,০০০ টাকা থেকে। নন ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটরের ক্ষেত্রে তা ৪৫,০০০ টাকা । যদিও সম্প্রতি দেশের নিম্নবিত্ত মানুষের কথা মাথায় রেখে সিঙ্গার আরও সাশ্রয়ে মূল্যে রেফ্রিজারেটর উৎপন্ন করার পরিকল্পনা করছে।
কেন কিনবেন সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর?
- সর্বাধুনিক টেকনোলজি এবং মানসম্পন্ন ম্যাটোরিয়াল। উন্নত মানের কম্প্রেসর।
- সিঙ্গার তাড়াতাড়ি রেফ্রিজারেটরগুলোতে এনার্জি ইফিসিয়েন্ট গ্যাস ব্যবহার করে থাকে।
- ফার্স্ট কুলিং টেকনোলজি সমৃদ্ধ, পাশাপাশি অধিকাংশ রেফ্রিজারেটর ৫০%-৬৫% বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
- খাবারের মান থেকে অটুট, খাবার থাকে ফ্রেশ।
- বাজেট ফ্রেন্ডলি।
- দীর্ঘমেয়াদি গ্যারান্টি ও ওয়ারেন্টি সুবিধা।
- সহজ কিস্তি, সহজ ইনস্টলমেন্ট, ইউজার ফ্রেন্ডলি।
কনকা রেফ্রিজারেটর
এটি একটি চীনা ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা শুরু করে। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করে কনকা গ্রুপ এন্ড লিমিটেড রাখা হয়।
বিগত ৪২ বছরে প্রতিষ্ঠানটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ইলেকট্রনিক বাজারের ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে।
বিগত ২ দশকে বাংলাদেশের বাজারে কনকার প্রতিটি পণ্য তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। যার মধ্যে অন্যতম কনকা রেফ্রিজারেটর।
রেফ্রিজারেটর এর দাম
বাংলাদেশের বছরে কনকা রেফ্রিজারেটরের স্টক শুরু ৩০,০০০টাকা থেকে। বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে কনকার ৪০টিরও বেশি মডেল এবং ১৬০টির বেশি কালার ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে।
কেন কিনবেন কনকা রেফ্রিজারেটর?
- ইজি ইনস্টলমেন্ট এবং ইজি সার্ভিসিং।
- রয়েছে হিউমিডিটি কন্ট্রোলিং টেকনোলজি।
- রয়েছে ব্লু জোন এবং ভিটামিন ফ্রেশ টেকনোলজি।
- এছাড়াও রয়েছে এন্টিফাঙ্গাল ডোর গ্যাস্কেট, যার মাধ্যমে কোন রোগ জীবাণু ফ্রিজের ভেতর প্রবেশ করতে পারে না এবং ফ্রিজের কুলিং ডাউন হয় না।
- থাকছে ডিজিটাল ডিসপ্লে ইনভার্টার টেকনোলজি-যেটি কিনা ৭১ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
মিনিস্টার রেফ্রিজারেটর
২০০২ সালে মাত্র পাঁচ জন কর্মী নিয়ে সাদা কালো টিভি তৈরির কারখানা স্থাপন করেছিলেন মিস্টার এম এ রাজ্জাক।
বর্তমানে মিনিস্টার বাংলাদেশের অন্যতম ইলেকট্রনিক পণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশের ১৫ শতাংশ রেফ্রিজারেটর ব্যবহারকারী মিনিস্টার রেফ্রিজারেটর ব্যবহার করে থাকেন।
মিনিস্টার রেফ্রিজারেটরের দাম
বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে ২৬,৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১,৫০,০০০ টাকার মিনিস্টার রেফ্রিজারেটর রয়েছে। প্রিমিয়াম রেফ্রিজারেটর এর অসাধারণ ডিজাইনিং দেখতে চমৎকার সাথে ইউজার ফ্রেন্ডলি। এছাড়াও মিনিস্টারের হয়েছে বেশ কয়েকটি বাজেট ফ্রেন্ডলি ফ্রিজ মডেল।
কেন কিনবেন মিনিস্টার রেফ্রিজারেটর?
- দেশীয় পণ্য, সারা দেশ জুড়ে রয়েছে অফিসিয়াল আউটলেট। সুতরাং হাতের কাছেই রয়েছে শতভাগ অরিজিনাল পণ্যের নিশ্চয়তা।
- প্রোপার কুলিং টেম্পারেচার টেকনোলজি থাকার ফলে খাবারের গুণগত মান কখনো থাকে।
- ফুড গ্রেড – কোরিয়ান রেজন।
- হাই টেম্পার গ্লাস ডোর সহ রয়েছে অন্যান্য কোয়ালিটি সম্পন্ন মেটেরিয়াল।
- ৬৬% এনার্জি সেভিংস – যথেষ্ট বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
ভিশন রেফ্রিজারেটর
বাংলাদেশের রেফ্রিজারেটরের বাজারে ভিশন অতি পরিচিত একটি নাম। প্রতিনিয়তই দেশের বাজারে এটি বাজেট ফ্রেন্ডলি রেফ্রিজারেটর লঞ্চ করে থাকে। যার ফলে দেশের মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য রেফ্রিজারেটর অনেকটাই সহজলভ্য হয়েছে। বর্তমানে ভিশনের মোট ৩২ টি মডেল বাংলাদেশের বছরে অ্যাভেলেবেল, যার মধ্যে ২৮ টি ফ্রস্ট ফ্রিজ, বাকি চারটি ননফ্রস্ট। ধারণ ক্ষমতা ২৬৭ থেকে ৫৫৬ লিটার।
ভিশন রেফ্রিজারেটরের দাম
ভিশন ফ্রিজারের স্টক শুরু ১৩,০০০ থেকে, এবং রেফ্রিজারেটরের স্টক শুরু ২৮,০০০ টাকা থেকে।
ভিশনের এর বেশ কিছু বাজেট ফ্রেন্ডলি রেফ্রিজারেটর মডেল রয়েছে।
কেন কিনবেন ভিশন রেফ্রিজারেটর?
- রেফ্রিজারেটরগুলো সাশ্রয়ী এবং সুলভ মূল্যে সংগ্রহ করতে পারবেন আপনার নিকটস্থ আউটলেট থেকে।
- ১০০% ফুডগ্রেড মেটারিয়ালে তৈরি, যার ফলে খাবার থাকবে নিরাপদ।
- পারফর্মিং কুলিং সিস্টেম-যার ফলে যে কোন মৌসুমে খাবার থাকবে সম্পূর্ণ ফ্রেশ।
- পরিবেশ বান্ধব কুলিং গ্যাস ব্যবহার করার ফলে পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে না।
- রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল গ্যাসকেট ।
- শক্তিশালী এবং অত্যাধুনিক কম্প্রেসার।
- অধিকাংশ রেফ্রিজারেটর ৫০% থেকে ৬০% বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর
সালটা ১৯৭০! বাংলাদেশ প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে, ইস্পাতের ব্যবসা শুরু করেন এসএম নজরুল ইসলাম। ১৯৭৭ সালে, বড় ভাই রিজভীকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন রিজভী এন্ড ব্রাদার্স গ্রুপ।
ঠিক তারও প্রায় ২৩ বছর পর ইলেকট্রনিক্স অটোমোবাইল ব্যবসায় প্রবেশ করেন এবং এর ঠিক ছয় বছর পর অর্থাৎ ২০০৬ সালে গাজীপুরের চন্দ্রায় প্রতিষ্ঠিত হয় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রথম কারখানা !
এবং বর্তমানে ওয়ালটন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় টেক জয়েন্ট ইন্ডাস্ট্রি ! যার বর্তমান মার্কেট ভলিউম ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশের বাজারে সুখ্যাতি অর্জন করে ওয়ালটন পণ্য বর্তমানে দেশের বাইরে রপ্তানি করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের বাজারে ওয়ালটন রেফ্রিজারেটরের চাহিদা বিপুল ! বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে প্রতিবছরের রেফ্রিজারেটরের চাহিদা প্রায় ৫৩ লক্ষ। অপরদিকে ওয়ালটন রেফ্রিজারেটরের চাহিদা প্রায় ৪০ লাখ। অর্থাৎ ১০০ জন ক্রেতার ভেতরে, ৭৫ জন ক্রেতা ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর করে থাকেন.
ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর এর দাম
বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে ওয়ালটনের প্রায় দুই শতাধিক রেফ্রিজারেটর এবং ফ্রিজার মডেল রয়েছে। যার স্টক শুরু ১২ হাজার ৯৯০ টাকা থেকে ২,৫০,০০০ টাকা। এত বেশি মডেল থাকার ফলে গ্রাহকেরা তাঁদের রুচি অনুযায়ী পছন্দসই ডিজাইন, ফিচার ও দামের ফ্রিজ বেছে নিতে পারেন খুব সহজেই !
কেন কিনবেন ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর?
- ওয়ালটন বিএসটিআই কর্তৃক এনার্জি সেভিংস-এ ফাইভ স্টার রেটিং প্রাপ্ত।
- রয়েছে ওয়াইড ভোল্টেজ ডিজাইন।
- স্বাস্থ্যকর খাবার দাবারে শতভাগ নিশ্চয়তা !
- স্মার্ট কন্ট্রোল সিস্টেম এবং যথেষ্ট ইউজার ফ্রেন্ডলি।
- দীর্ঘমেয়াদি গ্যারান্টি ও ওয়ারেন্টি।
- দেশ জুড়ে রয়েছে শতাধিক আউটলেট।
- প্রতিনিয়তই ডিজিটাল ক্যাম্পেইনে বিভিন্ন ক্রেতা সুবিধা দিয়ে থাকে, সাথে থাকবে আকর্ষণীয় অফার ও ডিসকাউন্ট।
কোন ভিত্তিতে তারাই দেশের সেরা রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ড?
যে বিষয়গুলো বিবেচনায় এনে উক্ত ১০ টি রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ড বাংলাদেশের সেরা রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ড:
ক্রেতার চাহিদা:
বাংলাদেশের ক্রেতাদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে মূলত উক্ত ১০ টি ব্র্যান্ড সেরা রেফ্রিজারেটর উৎপন্ন করে থাকে। বেশ কয়েকটি বিদেশি ব্র্যান্ড রয়েছে, যারা ক্রেতার চাহিদা পুরোপুরি বুঝতে সক্ষম নন, এবং তারা সচরাচর প্রিমিয়াম রেফ্রিজারেটর প্রস্তুত করে থাকেন। সে কারণে দেশের বাজারে তাদের কদর তুলনামূলক কম। অপরদিকে ওয়ালটন,মিনিস্টার, ভিশন সহ দেশি বিদেশি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা দেশী ক্রেতাদের চাহিদা মোতাবেক রেফ্রিজারেটর প্রস্তুত করে থাকেন।
ক্রয় ক্ষমতা:
উক্ত ১০ টি ব্র্যান্ড বাংলাদেশী ব্যবহারকারীদের ক্রয় ক্ষমতা অনুযায়ী পণ্য বিক্রি করে থাকে। সাধারণত দেশি ক্রেতারা ৩০-৫০ হাজারের বাজেট সেগমেন্ট রেফ্রিজারেটর ক্রয় করে থাকে। এবং এই বাজেট রেঞ্জের ভেতরে যে সকল ব্র্যান্ড সেরা রেফ্রিজারেটর উৎপন্ন করে, তাদেরকেই লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
কোয়ালিটি:
বাজেট ফ্রেন্ডলি হলেই যে তার কোয়ালিটি নিয়ে দ্বিধা থাকবে – তা কেন?
বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে বিদেশে ব্র্যান্ডগুলোর পাশাপাশি দেশীয় ব্র্যান্ডগুলো এক্সপোর্ট কোয়ালিটির পণ্য প্রস্তুত করে থাকে। যার ফলে বর্তমানে বিদেশি পণ্যের চেয়ে দেশী পণ্যের কদর কিছুটা বেশি। কোয়ালিটির দিক দিয়েও পিছিয়ে নেই দেশি রেফ্রিজারেট ব্র্যান্ড ।
গ্যারান্টি ও ওয়ারেন্টি:
তালিকায় উল্লেখিত ১০ টি ব্র্যান্ডের অধিকাংশ রেফ্রিজারেটর দীর্ঘকালীন গ্যারান্টি ও ওয়ারেন্টি সমৃদ্ধ হওয়ায় এগুলি বাংলাদেশের ক্রেতাদের কাছে বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সার্ভিসিং-এ ঝোঁক ঝামেলা কম বিধায়, রেফ্রিজারেটর কেনার প্রতি আস্থা এসেছে মানুষের।
রেফ্রিজারেটর বাজারে ব্র্যান্ডের প্রভাব:
মার্কেট দখলের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে উক্ত ব্র্যান্ডগুলি। যাদের মতো সবার শেষে রয়েছে দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন। বাংলাদেশের রেফ্রিজারেটর বাজারের প্রায় ৭৫% দখল করে রয়েছে ওয়ালটন। তার পাশাপাশি রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি দেশ-বিদেশি ব্র্যান্ড! মূলত এ সকল ব্র্যান্ড হলো শুধু রেফ্রিজারেটর নয় তার পাশাপাশি অন্য সকল হোম এপ্লায়েন্সেস বিক্রির ক্ষেত্রে দেশের বাজারে তুমুল জনপ্রিয়।
সর্বোপরি, দেশের বাজারে রেফ্রিজারেটরের চাহিদা দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে! উৎসব অনুষ্ঠান, বিশেষ করে পবিত্র ঈদুল আযহার সময় এই চাহিদা আরো বহুগুনে বেড়ে যায়। অত্যাধুনিক টেকনোলজি ও গুণগতমান সম্পন্ন মেটারিয়ালস দিয়ে রেফ্রিজারেটরগুলো প্রস্তুত করার হয়ে থাকে৷ যার ফলে একদিনে যেমন দেশীয় ক্রেতারা যথেষ্ট লাভবান হচ্ছেন, তার পাশাপাশি ভালো মুনাফা গুনছে বাজার দখল রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ডগুলি!